ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে ইসলামি স্থাপত্যের বিকাশ

মুক্তবাংলা ডেস্ক

ষাটগম্বুজ মসজিদ

বাংলা অঞ্চলের হাজার বছরের ইতিহাসে ধর্ম, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের যে সমন্বয় ঘটেছে, তার মধ্যে ইসলামি স্থাপত্য এক মহিমান্বিত অধ্যায়। কালের গহ্বরে কিছু নিদর্শন হারিয়ে গেলেও, আজও দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদের গম্বুজ, মাদ্রাসার মিনার কিংবা মাজারের কারুকাজ ইসলামের প্রসার ও সৃজনশীলতার এক অনুপম সাক্ষ্য বহন করে।

ইসলামের সঙ্গে বাংলার মিতালি শুরু অষ্টম শতকের মাঝামাঝি আরব বণিকদের মাধ্যমে। তবে ইসলামি স্থাপত্যের সুনির্দিষ্ট রূপটি প্রকাশ পায় ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির বঙ্গজয়ের মাধ্যমে। মুসলিম শাসনের সূচনা ইসলামি স্থাপত্যের বিস্তারে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। সুলতানি আমলের মসজিদগুলোতে স্থান পায় বাংলার নিজস্ব নির্মাণশৈলীর সঙ্গে তুর্কি, পারস্য ও আরব স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণ।

এই স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য হলো একাধিক গম্বুজ, খিলান, পোড়ামাটির কারুকাজ এবং আরবি-ফারসি শিলালিপি। মোগল আমলে স্থাপত্যরীতির নতুন এক অধ্যায় শুরু হয়, যা বাংলার ইসলামি স্থাপত্যকে শৈল্পিক উৎকর্ষের চূড়ায় পৌঁছে দেয়। মোগল স্থাপত্যের বিশেষ বৈশিষ্ট্য—সিমেট্রিক্যাল নকশা, মার্বেল ও রঙিন টাইলসের ব্যবহার এবং চতুর্দিকে বিশাল বাগানের সমন্বয়; আজও মুগ্ধতা ছড়ায়।

বাংলা অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা ইসলামি স্থাপত্য কেবল সৌন্দর্যের প্রতীক নয়; বরং সেগুলো বাংলার ইতিহাস ও সংস্কৃতির গভীর ভিত্তি। এখানে বাংলাদেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন স্থাপনার কথা তুলে ধরা হলো—

বাগেরহাটে অবস্থিত ষাটগম্বুজ মসজিদ শুধু বাংলাদেশের নয়; বরং দক্ষিণ এশিয়ার ইসলামি স্থাপত্যের অন্যতম মহিরুহ। খান জাহান আলী কর্তৃক ১৫ শতকে নির্মিত এ মসজিদে মূলত ৬০টি গম্বুজ নয়, বরং ৭৭টি ছোট গম্বুজ এবং ৪টি বড় গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের ভেতরে পাথরের বিশাল খুঁটির সারি এবং প্রার্থনাকক্ষের জ্যামিতিক নকশা শিল্পসৌন্দর্যের অনন্য নিদর্শন। ১৯৮৫ সালে ইউনেসকো একে বিশ্বঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থিত ছোট সোনামসজিদ বাংলার সুলতানি আমলের স্থাপত্যকৌশলের এক অনন্য নিদর্শন। কালো পাথরে খোদাই করা ফুল-লতার নকশা, আরবি শিলালিপি ও জ্যামিতিক কারুকাজ মসজিদটিকে জীবন্ত করে তুলেছে। সোনা দিয়ে অলংকৃত গম্বুজগুলো একসময় এ মসজিদের নামকরণের পেছনের কারণ ছিল। সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের রাজত্বকালে (১৪৯৩-১৫১৯) ওয়ালি মুহাম্মদ আলী এ মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদের দরজার ওপরের অংশের একটি পাথরে খচিত উৎকীর্ণ আরবি শিলালিপি থেকে এই তথ্য জানা যায়।

কুসুম্বা মসজিদ বাংলাদেশের মুসলিম স্থাপত্যকলার অমূল্য নিদর্শন। ইতিহাসের ধারায় মসজিদটি এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। শেরশাহ সুরির বংশধর, আফগান সুলতান প্রথম গিয়াস উদ্দিন বাহাদুরের শাসনামলে, ১৫৫৮-৫৯ খ্রিষ্টাব্দে এটি নির্মিত হয়। এটি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কুসুম্বা গ্রামে অবস্থিত এবং সুলতানি আমলের রুচিশীল স্থাপত্যের এক চমৎকার উদাহরণ। মিহরাবের ওপরে লেখা রয়েছে সুলতান আলাউদ্দীন হোসেন শাহর নাম। তা থেকে অনুমান করা হয়, তাঁর শাসনকালেই এটি নির্মিত হয়। মসজিদটি চতুর্ভুজ আকৃতির এবং কালো-ধূসর পাথর, পোড়ামাটি ও মাটির টালি দিয়ে নির্মিত। দেয়ালে পোড়ামাটির সূক্ষ্ম জ্যামিতিক নকশা। মিহরাবে দেখা যায় বিচিত্র ফুল, লতাপাতা, ঝুলন্ত শিকল ও মনোমুগ্ধকর শিল্পকর্ম। চার কোণে রয়েছে চারটি আটকোনা বুরুজ। ভেতরে রয়েছে দুটি প্রশস্ত স্তম্ভ এবং ছয়টি গম্বুজ। সামনে রয়েছে বিশাল জলাশয়।

বাংলার প্রথম যুগের মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন দারাসবাড়ি মসজিদ। এটি নির্মিত হয় খ্রিষ্টীয় ১৪ শতকে বাংলার আদি রাজধানী গৌড়ের ফিরোজপুরে। তখনকার শাসক সুলতান শামসুদ্দীন ইউসুফ শাহের আদেশে এটি নির্মিত হয়। তখন এর নাম ছিল ফিরোজপুর মসজিদ। ১৫ শতকে ওই এলাকার শাসক নিযুক্ত হন সুলতান হোসেন শাহ। মসজিদটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তঘেঁষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থিত। মহানন্দার তীর ধরে কয়েক কিলোমিটার ভেতরে এর অবস্থান। মসজিদের পাশে আছে একটি দিঘি। দিঘির এক পাশে মসজিদ; অন্য পাশে মাদ্রাসা। ধারণা করা হয়, এটি বাংলার অন্যতম প্রাচীন মাদ্রাসা। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখানে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসতেন। এ মাদ্রাসার স্থাপত্যসৌন্দর্য মুগ্ধ করার মতো।

বরগুনায় অবস্থিত বিবিচিনি মসজিদ খান জাহান আলীর সময়ের আরেক বিখ্যাত স্থাপত্য। ১৬৫৯ সালে শাহ সুজার আগ্রহে কয়েকজন শিষ্য সঙ্গে নিয়ে শাহ নেয়ামত উল্লাহ আসেন বর্তমান বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার এই গ্রামে। তখন এই গ্রামের নাম বিবিচিনি ছিল না। পরে শাহ সুজার অনুরোধে এখানে তিনি এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণ করেন। শাহ নেয়ামত উল্লাহর মেয়ে চিনিবিবির নামানুসারে গ্রামের নামকরণ করা হয় বিবিচিনি। মার্বেল পাথর, পোড়ামাটির ফলক এবং মিহরাবের কারুকাজ এ মসজিদের শৈল্পিক সৌন্দর্যকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়।

ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় আধুনিক ইসলামি স্থাপত্যেও বাংলার ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটে। ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ তার চমৎকার উদাহরণ। জাতীয় মসজিদ হিসেবে পরিচিত এই মসজিদে কাবা শরিফের স্থাপত্যশৈলীর প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে। এর মার্বেল পাথর, আধুনিক স্থাপত্য রীতি এবং সরল নকশা আধুনিক যুগের ইসলামি স্থাপত্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এ ছাড়া এ অঞ্চলের ভূগোল, পরিবেশ ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিল রেখে নির্মিত সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি পরিবেশবান্ধব মসজিদ বাংলাদেশকে বৈশ্বিক স্থাপত্যে জায়গা করে দিয়েছে। ঢাকার অদূরের বায়তুল রউফ মসজিদ, সাভারের জেবুন নেসা মসজিদ, লক্ষ্মীপুরের আস-সালাম জামে মসজিদ এবং কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আপডেট : ০১:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
১১ বার

বাংলাদেশে ইসলামি স্থাপত্যের বিকাশ

আপডেট : ০১:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলা অঞ্চলের হাজার বছরের ইতিহাসে ধর্ম, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের যে সমন্বয় ঘটেছে, তার মধ্যে ইসলামি স্থাপত্য এক মহিমান্বিত অধ্যায়। কালের গহ্বরে কিছু নিদর্শন হারিয়ে গেলেও, আজও দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদের গম্বুজ, মাদ্রাসার মিনার কিংবা মাজারের কারুকাজ ইসলামের প্রসার ও সৃজনশীলতার এক অনুপম সাক্ষ্য বহন করে।

ইসলামের সঙ্গে বাংলার মিতালি শুরু অষ্টম শতকের মাঝামাঝি আরব বণিকদের মাধ্যমে। তবে ইসলামি স্থাপত্যের সুনির্দিষ্ট রূপটি প্রকাশ পায় ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির বঙ্গজয়ের মাধ্যমে। মুসলিম শাসনের সূচনা ইসলামি স্থাপত্যের বিস্তারে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। সুলতানি আমলের মসজিদগুলোতে স্থান পায় বাংলার নিজস্ব নির্মাণশৈলীর সঙ্গে তুর্কি, পারস্য ও আরব স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণ।

এই স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য হলো একাধিক গম্বুজ, খিলান, পোড়ামাটির কারুকাজ এবং আরবি-ফারসি শিলালিপি। মোগল আমলে স্থাপত্যরীতির নতুন এক অধ্যায় শুরু হয়, যা বাংলার ইসলামি স্থাপত্যকে শৈল্পিক উৎকর্ষের চূড়ায় পৌঁছে দেয়। মোগল স্থাপত্যের বিশেষ বৈশিষ্ট্য—সিমেট্রিক্যাল নকশা, মার্বেল ও রঙিন টাইলসের ব্যবহার এবং চতুর্দিকে বিশাল বাগানের সমন্বয়; আজও মুগ্ধতা ছড়ায়।

বাংলা অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা ইসলামি স্থাপত্য কেবল সৌন্দর্যের প্রতীক নয়; বরং সেগুলো বাংলার ইতিহাস ও সংস্কৃতির গভীর ভিত্তি। এখানে বাংলাদেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন স্থাপনার কথা তুলে ধরা হলো—

বাগেরহাটে অবস্থিত ষাটগম্বুজ মসজিদ শুধু বাংলাদেশের নয়; বরং দক্ষিণ এশিয়ার ইসলামি স্থাপত্যের অন্যতম মহিরুহ। খান জাহান আলী কর্তৃক ১৫ শতকে নির্মিত এ মসজিদে মূলত ৬০টি গম্বুজ নয়, বরং ৭৭টি ছোট গম্বুজ এবং ৪টি বড় গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের ভেতরে পাথরের বিশাল খুঁটির সারি এবং প্রার্থনাকক্ষের জ্যামিতিক নকশা শিল্পসৌন্দর্যের অনন্য নিদর্শন। ১৯৮৫ সালে ইউনেসকো একে বিশ্বঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থিত ছোট সোনামসজিদ বাংলার সুলতানি আমলের স্থাপত্যকৌশলের এক অনন্য নিদর্শন। কালো পাথরে খোদাই করা ফুল-লতার নকশা, আরবি শিলালিপি ও জ্যামিতিক কারুকাজ মসজিদটিকে জীবন্ত করে তুলেছে। সোনা দিয়ে অলংকৃত গম্বুজগুলো একসময় এ মসজিদের নামকরণের পেছনের কারণ ছিল। সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের রাজত্বকালে (১৪৯৩-১৫১৯) ওয়ালি মুহাম্মদ আলী এ মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদের দরজার ওপরের অংশের একটি পাথরে খচিত উৎকীর্ণ আরবি শিলালিপি থেকে এই তথ্য জানা যায়।

কুসুম্বা মসজিদ বাংলাদেশের মুসলিম স্থাপত্যকলার অমূল্য নিদর্শন। ইতিহাসের ধারায় মসজিদটি এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। শেরশাহ সুরির বংশধর, আফগান সুলতান প্রথম গিয়াস উদ্দিন বাহাদুরের শাসনামলে, ১৫৫৮-৫৯ খ্রিষ্টাব্দে এটি নির্মিত হয়। এটি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কুসুম্বা গ্রামে অবস্থিত এবং সুলতানি আমলের রুচিশীল স্থাপত্যের এক চমৎকার উদাহরণ। মিহরাবের ওপরে লেখা রয়েছে সুলতান আলাউদ্দীন হোসেন শাহর নাম। তা থেকে অনুমান করা হয়, তাঁর শাসনকালেই এটি নির্মিত হয়। মসজিদটি চতুর্ভুজ আকৃতির এবং কালো-ধূসর পাথর, পোড়ামাটি ও মাটির টালি দিয়ে নির্মিত। দেয়ালে পোড়ামাটির সূক্ষ্ম জ্যামিতিক নকশা। মিহরাবে দেখা যায় বিচিত্র ফুল, লতাপাতা, ঝুলন্ত শিকল ও মনোমুগ্ধকর শিল্পকর্ম। চার কোণে রয়েছে চারটি আটকোনা বুরুজ। ভেতরে রয়েছে দুটি প্রশস্ত স্তম্ভ এবং ছয়টি গম্বুজ। সামনে রয়েছে বিশাল জলাশয়।

বাংলার প্রথম যুগের মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন দারাসবাড়ি মসজিদ। এটি নির্মিত হয় খ্রিষ্টীয় ১৪ শতকে বাংলার আদি রাজধানী গৌড়ের ফিরোজপুরে। তখনকার শাসক সুলতান শামসুদ্দীন ইউসুফ শাহের আদেশে এটি নির্মিত হয়। তখন এর নাম ছিল ফিরোজপুর মসজিদ। ১৫ শতকে ওই এলাকার শাসক নিযুক্ত হন সুলতান হোসেন শাহ। মসজিদটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তঘেঁষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থিত। মহানন্দার তীর ধরে কয়েক কিলোমিটার ভেতরে এর অবস্থান। মসজিদের পাশে আছে একটি দিঘি। দিঘির এক পাশে মসজিদ; অন্য পাশে মাদ্রাসা। ধারণা করা হয়, এটি বাংলার অন্যতম প্রাচীন মাদ্রাসা। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখানে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসতেন। এ মাদ্রাসার স্থাপত্যসৌন্দর্য মুগ্ধ করার মতো।

বরগুনায় অবস্থিত বিবিচিনি মসজিদ খান জাহান আলীর সময়ের আরেক বিখ্যাত স্থাপত্য। ১৬৫৯ সালে শাহ সুজার আগ্রহে কয়েকজন শিষ্য সঙ্গে নিয়ে শাহ নেয়ামত উল্লাহ আসেন বর্তমান বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার এই গ্রামে। তখন এই গ্রামের নাম বিবিচিনি ছিল না। পরে শাহ সুজার অনুরোধে এখানে তিনি এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণ করেন। শাহ নেয়ামত উল্লাহর মেয়ে চিনিবিবির নামানুসারে গ্রামের নামকরণ করা হয় বিবিচিনি। মার্বেল পাথর, পোড়ামাটির ফলক এবং মিহরাবের কারুকাজ এ মসজিদের শৈল্পিক সৌন্দর্যকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়।

ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় আধুনিক ইসলামি স্থাপত্যেও বাংলার ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটে। ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ তার চমৎকার উদাহরণ। জাতীয় মসজিদ হিসেবে পরিচিত এই মসজিদে কাবা শরিফের স্থাপত্যশৈলীর প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে। এর মার্বেল পাথর, আধুনিক স্থাপত্য রীতি এবং সরল নকশা আধুনিক যুগের ইসলামি স্থাপত্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এ ছাড়া এ অঞ্চলের ভূগোল, পরিবেশ ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিল রেখে নির্মিত সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি পরিবেশবান্ধব মসজিদ বাংলাদেশকে বৈশ্বিক স্থাপত্যে জায়গা করে দিয়েছে। ঢাকার অদূরের বায়তুল রউফ মসজিদ, সাভারের জেবুন নেসা মসজিদ, লক্ষ্মীপুরের আস-সালাম জামে মসজিদ এবং কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।