ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড

মুক্তবাংলা ডেস্ক

ছবি: অনলাইন

চট্টগ্রামে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার দায়ে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আজ সোমবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক আরা এই রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. সুমন (৩৫) ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কাশেমের ছেলে।

ট্রাইব্যুনালের পেশকার কফিল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি সুমনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামি সুমন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা মূলে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সালে সুমনের সঙ্গে ভুজপুর থানার নারায়ণহাট ইউনিয়নের মনি আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সুমন বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। মনি আক্তার হালদা ভ্যালি চা-বাগানে কাজ করার সুবাদে নিজের আয় থেকে তাঁর স্বামীকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকাও দেন। এরপর আরও টাকার জন্য সুমন স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতেন বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়। ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর স্ত্রী ও মামাতো ভাই মো. টিপুকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যান সুমন। সেখানে তিনি শ্বশুর মমতাজের কাছে যৌতুক চান।

শ্বশুর টাকা দিতে রাজি না হলে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ির পথে রওনা দেন সুমন। পথে কালীকুম্ভ এলাকায় তিনি বাইক থামিয়ে মনিকে রাস্তায় পাশে নিয়ে মুখ বেঁধে মারধর শুরু করেন। মারধরে মনি আক্তারের হাত-পা ভেঙে যায়। ইট দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। সুমন মনির বাঁ চোখে আঘাত করে এবং মোটরসাইকেলের সাইলেন্সারে চেপে ধরে মনির বুক জখম করেন। এরপর মুমূর্ষু অবস্থায় মনি আক্তারকে প্রথমে একজন স্থানীয় পল্লি চিকিৎসকের কাছে এবং পরে সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন সুমন।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ নভেম্বর হাসপাতালে মারা যান মনি আক্তার। মৃত্যুর দুই দিন পর ২০২১ সালের ২৭ নভেম্বর নিহতের ভাই আব্বাস বাদী হয়ে ফটিকছড়ি থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্ত চলাকালে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন সুমন। তদন্ত শেষে পুলিশ অভিযোগপত্র জমা দিলে ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর আসামি সুমনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ এই রায় দেন আদালত।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আপডেট : ১২:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৭ বার

চট্টগ্রামে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড

আপডেট : ১২:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চট্টগ্রামে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার দায়ে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আজ সোমবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক আরা এই রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. সুমন (৩৫) ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কাশেমের ছেলে।

ট্রাইব্যুনালের পেশকার কফিল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি সুমনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামি সুমন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা মূলে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সালে সুমনের সঙ্গে ভুজপুর থানার নারায়ণহাট ইউনিয়নের মনি আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সুমন বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। মনি আক্তার হালদা ভ্যালি চা-বাগানে কাজ করার সুবাদে নিজের আয় থেকে তাঁর স্বামীকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকাও দেন। এরপর আরও টাকার জন্য সুমন স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতেন বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়। ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর স্ত্রী ও মামাতো ভাই মো. টিপুকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যান সুমন। সেখানে তিনি শ্বশুর মমতাজের কাছে যৌতুক চান।

শ্বশুর টাকা দিতে রাজি না হলে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ির পথে রওনা দেন সুমন। পথে কালীকুম্ভ এলাকায় তিনি বাইক থামিয়ে মনিকে রাস্তায় পাশে নিয়ে মুখ বেঁধে মারধর শুরু করেন। মারধরে মনি আক্তারের হাত-পা ভেঙে যায়। ইট দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। সুমন মনির বাঁ চোখে আঘাত করে এবং মোটরসাইকেলের সাইলেন্সারে চেপে ধরে মনির বুক জখম করেন। এরপর মুমূর্ষু অবস্থায় মনি আক্তারকে প্রথমে একজন স্থানীয় পল্লি চিকিৎসকের কাছে এবং পরে সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন সুমন।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ নভেম্বর হাসপাতালে মারা যান মনি আক্তার। মৃত্যুর দুই দিন পর ২০২১ সালের ২৭ নভেম্বর নিহতের ভাই আব্বাস বাদী হয়ে ফটিকছড়ি থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্ত চলাকালে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন সুমন। তদন্ত শেষে পুলিশ অভিযোগপত্র জমা দিলে ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর আসামি সুমনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ এই রায় দেন আদালত।