ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ৩৫ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ৩৫ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

সিরিয়ার নতুন শাসকগোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যোদ্ধারা গত ৭২ ঘণ্টায় ৩৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন। যাঁদের প্রায় সবাই ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত বাশার আল-আসাদ সরকারের কর্মকর্তা। সিরিয়া নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস গতকাল রোববার এ তথ্য জানিয়েছে।

সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহু বছরের শাসনের পর বিদ্রোহী বাহিনীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত বাশার আল-আসাদের পতনের এক মাসের মধ্যে নতুন কর্তৃপক্ষ পশ্চিম হোমস অঞ্চলে ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে বলে দাবি করেছে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।

সিরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সানা শুক্রবার জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে অত্যাচার চালানো এক ‘অপরাধী গোষ্ঠীকে’ অভিযুক্ত করেছে। তবে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্য থেকে ৩৫ জনকে দ্রুত সংক্ষিপ্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, ‘এই গ্রেপ্তার ও ৩৫ জনের প্রাণহানির ঘটনা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী পদক্ষেপ।’

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা’ অপমান ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ব্রিটেনভিত্তিক এই পর্যবেক্ষক সংস্থার মতে, যাদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের অধিকাংশই আসাদ সরকারের সাবেক কর্মকর্তা। এসব কর্মকর্তার সবাই নতুন কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। সংস্থাটি আরও বলেছে, ‘নতুন ক্ষমতাসীন সুন্নি ইসলামপন্থী জোটের অধীনে থাকা স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা হোমস অঞ্চলে নিরাপত্তা অভিযানে অংশ নেয় এবং তাদের গ্রেপ্তার করে।’

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই গোষ্ঠীগুলো অস্ত্রের বিস্তার, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এবং নতুন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে (বাশার আল-আসাদের গোত্র) আলভীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিয়েছে এবং পুরোনো বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। বাশার আসাদও আলভী সম্প্রদায়ের সদস্য।’

অবজারভেটরি জানিয়েছে, গণহারে আটক, নির্মম নির্যাতন, ধর্মীয় প্রতীকগুলোর ওপর হামলা, লাশ বিকৃতকরণ এবং বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে অবমাননাকর ও ভয়ানক হত্যা—এগুলো এমন এক নিষ্ঠুরতার পরিচায়ক, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। সিভিল পিস গ্রুপ নামে এক নাগরিক সমাজ গোষ্ঠী জানিয়েছে, হোমস অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে এই নিরাপত্তা অভিযানের সময় বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আপডেট : ১২:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
১০ বার

সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ৩৫ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

আপডেট : ১২:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

সিরিয়ার নতুন শাসকগোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যোদ্ধারা গত ৭২ ঘণ্টায় ৩৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন। যাঁদের প্রায় সবাই ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত বাশার আল-আসাদ সরকারের কর্মকর্তা। সিরিয়া নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস গতকাল রোববার এ তথ্য জানিয়েছে।

সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহু বছরের শাসনের পর বিদ্রোহী বাহিনীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত বাশার আল-আসাদের পতনের এক মাসের মধ্যে নতুন কর্তৃপক্ষ পশ্চিম হোমস অঞ্চলে ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে বলে দাবি করেছে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।

সিরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সানা শুক্রবার জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে অত্যাচার চালানো এক ‘অপরাধী গোষ্ঠীকে’ অভিযুক্ত করেছে। তবে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্য থেকে ৩৫ জনকে দ্রুত সংক্ষিপ্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, ‘এই গ্রেপ্তার ও ৩৫ জনের প্রাণহানির ঘটনা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী পদক্ষেপ।’

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা’ অপমান ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ব্রিটেনভিত্তিক এই পর্যবেক্ষক সংস্থার মতে, যাদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের অধিকাংশই আসাদ সরকারের সাবেক কর্মকর্তা। এসব কর্মকর্তার সবাই নতুন কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। সংস্থাটি আরও বলেছে, ‘নতুন ক্ষমতাসীন সুন্নি ইসলামপন্থী জোটের অধীনে থাকা স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা হোমস অঞ্চলে নিরাপত্তা অভিযানে অংশ নেয় এবং তাদের গ্রেপ্তার করে।’

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই গোষ্ঠীগুলো অস্ত্রের বিস্তার, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এবং নতুন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে (বাশার আল-আসাদের গোত্র) আলভীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিয়েছে এবং পুরোনো বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। বাশার আসাদও আলভী সম্প্রদায়ের সদস্য।’

অবজারভেটরি জানিয়েছে, গণহারে আটক, নির্মম নির্যাতন, ধর্মীয় প্রতীকগুলোর ওপর হামলা, লাশ বিকৃতকরণ এবং বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে অবমাননাকর ও ভয়ানক হত্যা—এগুলো এমন এক নিষ্ঠুরতার পরিচায়ক, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। সিভিল পিস গ্রুপ নামে এক নাগরিক সমাজ গোষ্ঠী জানিয়েছে, হোমস অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে এই নিরাপত্তা অভিযানের সময় বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে।